• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১১:৪৯ অপরাহ্ন

ঠাকুরগাঁওয়ে বালিয়াডাঙ্গীতে কাঁচা রাস্তা পাকা জন্য খুঁড়ে রাখে এর কোনো তথ্য নেই, এলজিডি প্রকৌশল অফিসে ?

মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন
মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন / ১৪
বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

মোঃ মজিবর রহমান শেখ,
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় পাকা করার জন্য ৪ বছর আগে একটি রাস্তার আধা কিলোমিটার অংশ খোঁড়া হয়। রাস্তা পাকা হচ্ছে, তাই এলাকাবাসীর কাছ থেকে মিষ্টি খেতে ৬৫ হাজার টাকাও নিয়েছিল বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রকৌশল অফিস। গ্রামবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাস্তায় সামান্য বালু ও খোয়া ফেলে বিল তুলে পালিয়েছে। তবে এসব কোনো তথ্যই জানা নেই বর্তমান বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রকৌশলীর।
এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিনের দাবির মুখে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের বেংরোল জিয়াবাড়ী গ্রামের হায়দার আলীর মোড় থেকে তাহেরের বাড়ি পর্যন্ত আধা কিলোমিটার রাস্তা পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কাজের অংশ হিসেবে ঐ রাস্তার মাটি খোঁড়া হয়। তখন মিষ্টি খেতে ২ দফায় ৬৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন ওই সময়ে দায়িত্বে থাকা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রকৌশলী ও তাঁর লোকজন। এসব টাকা গ্রামবাসীর কাছ থেকে সংগ্রহ করে দিয়েছিলেন আব্দুল কাদের নামের এক ব্যক্তি। রাস্তা পাকা না হওয়ায় টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে গ্রামের লোকজন। আব্দুল কাদের বলেন, ‘গ্রামবাসীর কাছ থেকে ১০০, ৫০০ ও ১০০০ করে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা, পরে আরও ১৫ হাজার টাকা তুলে ইঞ্জিনিয়ার অফিসে দিয়েছি। কাজ না হওয়ায় গ্রামের লোকজন এখন আমার কাছে টাকা ফেরত চাইছে। কয়েক দিন আগে টাকা ফেরত না দেওয়ায় বাড়িতে ঢিল ছুড়েছে গ্রামের লোকজন। লজ্জায় হাট-বাজারে যেতে পারছি না।’সাজু নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘শুনেছিলাম প্রায় কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল এই রাস্তা নির্মাণে। তাড়াহুড়ো করে রাস্তা খুঁড়ল ঠিকাদার। মনে করেছিলাম দীর্ঘদিন পরে হলেও রাস্তা পাকা হচ্ছে, দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে গ্রামবাসী। এখন উল্টো দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। এলজিইডি অফিসে খবর নিয়ে শুনেছি, ঠিকাদার বিল তুলে নিয়ে পালিয়েছে।’


বেংরোল জিয়াবাড়ী গ্রামের মনসুর আলম বলেন, এক সপ্তাহ আগে প্রতিবেশী বেলালের বাড়িতে আগুন লেগেছিল। রাস্তা খুঁড়ে রাখার কারণে ফায়ার সার্ভিস সময়মতো পৌঁছাতে পারেনি। তা ছাড়া বর্ষার সময় কাদাপানিতে এই এলাকায় কেউ আসতে চায় না।
কলেজছাত্র আল আমিন বলেন, ‘বর্ষার সময় গাড়ি আসতে চায় না। কলেজে ইজিবাইকে যেতে চাইলে ভাড়া বেশি চায়। এই ভোগান্তি থেকে সবাই মুক্তি চায়।’
রাস্তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম, বরাদ্দ সহ যাবতীয় তথ্যের জন্য একাধিকবার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরে যোগাযোগ করা হয়। তখন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রকৌশলী ভারপ্রাপ্ত শফিউল আলম এ জন্য সময় চান। ৬ দিন পর গত ২২ এপ্রিল সোমবার বিকেলে তাঁর কাছে গেলে তিনি উল্টো প্রশ্ন করেন, ‘৪ বছর আগের রাস্তার কাজ, এখন খবর নিতে আসছেন কেন? এমন তো হতে পারে ঠিকাদার ভুল করে ঐ রাস্তার কাজ শুরু করেছিলেন। আমি অতিরিক্ত দায়িত্বে আছি। এর বেশি কিছু জানি না।’তবে ৬৫ হাজার টাকা মিষ্টি খাওয়ার জন্য কে নিয়েছে, জানতে চাইলে জবাব দিতে অনীহা প্রকাশ করেন শফিউল আলম । তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডির ঠাকুরগাঁও জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মামুন বিশ্বাস সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘রাস্তা খুঁড়ে রাখবে ঠিকাদার, ৪ বছর ভোগান্তিতে থাকবে মানুষ, এটা হতে পারে না। সংবাদ প্রকাশ করেন, আমি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’

 


আরও সংবাদ