• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪:১১ অপরাহ্ন

ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক

নিজস্ব প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিনিধি / ১৩
শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
প্রায় সাড়ে ৩১ ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে

গাজীপুরে জয়দেবপুরে ট্রেন দুর্ঘটনার প্রায় ৩১ ঘণ্টা পর লাইনচ্যুত সব বগি উদ্ধার করা হয়েছে। এতে করে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।

শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ওই রুটে ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।

এ বিষয়ে জয়দেবপুর জংশন রেলওয়ে স্টেশনের উপসহকারী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে উদ্ধার কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর দুর্ঘটনা কবলিত লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ঘোষণা করা হয়েছে। এখন দুই লাইন দিয়েই ট্রেন চলাচল করতে পারবে।

এর আগে, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে স্টেশনের দক্ষিণে আউটার সিগন্যালে টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সঙ্গে তেলবাহী ওয়াগনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুটি ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় লোকোমাস্টার সহ চারজন আহত হন। এরপর ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রুটের ট্রেন চলাচল ২ ঘণ্টা বন্ধ হয়ে যায়।

পরে বিকল্প লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বিকেলে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়। রাত দিন উদ্ধার অভিযানে তেলবাহী ওয়াগনের লাইনচ্যুত ৪টি বগি অপসারণ করে পার্শ্ববর্তী স্টেশনে সরিয়ে নেয়া হয়। এছাড়া যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের ক্ষতিগ্রস্ত ৪ টি বগি রেল লাইনের পাশে ফেলে রাখা হয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে দুটি ইঞ্জিন ও ওয়াগনের বগি সরিয়ে ফেলে রেলওয়ে বিভাগ।

স্থানীয়রা বলছেন, রেলকর্মীদের গাফিলতির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ভয়াবহ সিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছেন যাত্রীরা।

রাজধানীর কমলাপুরের ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে দৈনিক ৫৩টি ট্রেন ছেড়ে গেলেও মাত্র ৪টি ট্রেন সঠিক সময়ে ছেড়ে যায়। বাকি অর্ধশত ট্রেনের অধিকাংশ ২ থেকে ৭ ঘণ্টা বিলম্বে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।

রেলস্টেশনে সময়সূচিতে দেখা গেছে, রংপুর এক্সপ্রেস প্রায় সাত ঘণ্টা বিলম্বে রয়েছে। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে এ ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও বিকেল ৪টায়ও ঢাকা থেকে ছাড়তে পারেনি। বিকেল পর্যন্ত ট্রেনটি বাতিলও করা হয়নি। স্টেশনের ইলেকট্রনিক বোর্ডে বিলম্বে ছাড়ার কথা লেখা ছিল। এ নিয়ে যাত্রীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যারা অনলাইনে টিকিট কেটেছেন তারা যাত্রা বাতিল করে টাকা ফেরত পাচ্ছিলেন না।

রেল স্টেশন সূত্র বলছে, লাইন ক্লিয়ার না হওয়ার কারণে জয়দেবপুর হয়ে যে ট্রেনগুলো যাতায়াত করে সেগুলোর বিলম্ব হচ্ছে। গতকাল থেকেই এসব ট্রেন বিলম্বে ছাড়ছে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার কালবেলাকে বলেন, উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় সব ট্রেনই ২ থেকে ৩ ঘণ্টা বিলম্বে ছাড়ছে। এখনো লাইন পুরোপুরি ঠিক হয়নি। সকাল থেকে এ রুটে ৮টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। আর সবই বিলম্বে চলছে। এদিকে ট্রেন বিলম্বে ছাড়ায় ছুটির দিনেও কমলাপুর স্টেশনে ছিল যাত্রীদের ভিড়। সাধারণত দিনে ৫৩টি ট্রেন কমলাপুর স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছেড়ে যায়। তবে জয়দেবপুর দুর্ঘটনার কারণে গতকাল থেকে সব ট্রেনই দেরি করে ছাড়ছে। এসব ট্রেন ঢাকায় পৌঁছেছেও দেরি করে।

এর আগে সকাল ৬টার রাজশাহী ধূমকেতু এক্সপ্রেস সকাল ৮টায়, ৬টা ১৫ মিনিটের কক্সবাজারগামী পর্যটন এক্সপ্রেস সকাল সাড়ে ৮টায়, ৬টা ৪৫ মিনিটের চিলাহাটিগামী চিলাহাটি এক্সপ্রেস ৯টায়, ৭টা ১৫ মিনিটের নীলফামারীগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সাড়ে ৯টায়, চট্টগ্রামগামী ৭টা ৪৫ মিনিটের মহানগর প্রভাতী ১০টার দিকে ছেড়ে যায়।

রাজশাহী কমিউটার, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেস, উপকূল এক্সপ্রেস, চট্টলা এক্সপ্রেস এর কোনোটিই সময়মতো ছেড়ে যায়নি।

স্টেশনে সরেজমিনে দেখা যায়, সন্তান ও স্বজন নিয়ে কেউ বসে আছেন, কেউবা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়েছেন বসার জায়গা না পেয়ে। স্টেশনের ভেতর অনেক যাত্রীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন  বলেন, জয়দেবপুর হয়ে উত্তর পশ্চিমের সব ট্রেন বিলম্বে ছেড়ে যাচ্ছে। একটি লাইন দিয়ে এ রুটে ট্রেন চলছে। আজকের মধ্যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।


আরও সংবাদ