• শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:২২ অপরাহ্ন

কুমারখালীতে পাওনা টাকার জেরে স্ত্রীর বড় ভাইকে কুপিয়ে হত্যা

মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন
মুহাম্মাদ শিমুল হুসাইন / ৬৬
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : ০১৯১১৬৫২৫৭০ (হোয়াটসঅ্যাপ)

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পাওনা টাকার জেরে ভগ্নিপতির বিরুদ্ধে স্ত্রীর বড় ভাইকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শনিবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের খোর্দ্দবন গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির দুই ছেলেসহ আরও অন্তত পাঁচজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত ওই ব্যক্তির নাম ইউনুস শেখ (৬০)। তিনি একই এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় কৃষক ছিলেন। আহত ব্যক্তিরা হলেন নিহত ইউনুস শেখের ছেলে রাসেল হোসেন ( ২৮) ও হোসেন আলী (২২)। অন্যরা হলেন রকিবুল ইসলাম (৪০), চাঁদ আলী (৪৫) ও অরুণ আলী (৪২)।

অন্যদিকে অভিযুক্ত ওই ভগ্নিপতির নাম মো. মোক্তার হোসেন (৫৫)। তিনিও একই এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোক্তার হোসেনের মেয়ের সঙ্গে নিহত ইউনুসের ছেলে হোসেনের প্রেমের সম্পর্কের পর প্রায় দুই বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। তবে সংসারে বনিবনা না হওয়ায় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধের চুক্তিতে তাঁদের মধ্যে পারিবারিকভাবে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী মেয়ের বাবা মোক্তারকে ওই অর্থ পরিশোধ করেননি ছেলের বাবা ইউনুস। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল।

খোর্দ্দবন এলাকায় ফসলি মাঠে নিহত ইউনুসের একটি সেচ আছে। ওই মাঠে মেয়ের বাবা মোক্তারের ধানখেত আছে। ইউনুস ওই ধানখেতে পানির সেচের খরচ বাবদ ধানের ভাগ চাইলে মোক্তার বিবাহবিচ্ছেদের সময়ে করা চুক্তির ওই অর্থ দাবি করেন। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। একপর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার সকালে ইউনুসের লোকজন মোক্তারের জমির ধান কাটতে যান। এ সময় অভিযুক্ত মোক্তার ও তাঁর লোকজন বাধা দেন। পরে ওই দিন বিকেলে মোক্তারকে প্রধান আসামি করে তিনজনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ইউনুস। লিখিত অভিযোগের এক দিন পর আজ সকালে ইউনুস তাঁর লোকজন নিয়ে জোর করে মোক্তারের জমির ধান কাটা শুরু করেন। ওই সময় দেশীয় অস্ত্র হাঁসুয়া, বেকি, কাচি, রামদাসহ নিজের লোকজন নিয়ে অতর্কিত হামলা করেন মোক্তার।

এ বিষয়ে নিহত ব্যক্তির ছেলে হোচেন আলী বলেন, সকালে পানি সেচের ভাগের ধান কাটতে গেলে তাঁর মামা মোক্তারসহ ২০ থেকে ২৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালান। হামলায় তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনিসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পরপরই আসামি পক্ষের পুরুষ সদস্যরা পালিয়ে গেছেন। লুটপাটের ভয়ে নারী সদস্যরা মালামাল সরিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু পুলিশের বাধায় মালামাল রেখেই পালিয়েছেন তাঁরা।

অভিযুক্ত পরিবারের লোকজন না থাকায় সংশ্লিষ্ট কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে ১৬ মে ইউনুসের করা লিখিত অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ধান কাটা ও পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে একজন খুন হয়েছেন। কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁরা আত্মীয়স্বজন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকাটিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন, ক্রাইম ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলা হবে।


আরও সংবাদ

জরুরি হটলাইন