• শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:০৪ অপরাহ্ন

এক বছরেও আলোর মুখ দেখেনি জাজিরা পৌরসভার আলোকসজ্জা প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিনিধি / ৫২
শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪
জাজিরা পৌরসভা।
আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন : ০১৯১১৬৫২৫৭০ (হোয়াটসঅ্যাপ)

শরীয়তপুরের জাজিরা পৌরসভার ৫০ লাখ টাকার আলোকসজ্জা প্রকল্প অনুমোদনের পর বছর পেরোলেও আলোর মুখ দেখেনি পৌরবাসীরা।

পৌরসভার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সড়কবাতির মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে চললেও মেয়রের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

জাজিরা পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের মার্চে পৌরসভার বিভিন্ন সড়কে ৭৫টি সড়কবাতি স্থাপনের প্রকল্প অনুমোদন হয়। প্রকল্পটির ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের দায়িত্ব পেয়েছে মেসার্স জেরিন ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাজিরা পৌরসভা ‘খ’ শ্রেণি থেকে ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে পৌরসভার শ্রেণি উন্নত হওয়া নিয়ে, শ্রেণি উন্নতিতে আসলে লাভ হয়েছে কার? পৌরবাসীর নাকি পৌরসভা কর্তৃপক্ষের। কারণ যেখানে পৌরসভাটি ‘খ’ শ্রেণির থাকা অবস্থায় একটি সড়কবাতি স্থাপনের টেন্ডার অনুমোদন হয়েছে তার মেয়াদ শেষ পর্যায় হলেও বাস্তবায়ন হয়নি। অথচ পৌরসভাটি ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ায় পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলরদের সম্মানি ও কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন ভাতাদি ঠিকই বেড়েছে।

সড়কবাতি স্থাপন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কর্তৃপক্ষের কোনো পদক্ষেপ না দেখে পৌরসভার বাসিন্দাদের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। তারা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে জাজিরা একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত। রাজধানী থেকে সরাসরি দিন-রাত আসা যাওয়া করে বিভিন্ন এলাকার মানুষ। অথচ পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে সড়কবাতি না থাকায় রাত হলে পৌরসভা এলাকা একটি ভূতুড়ে এলাকায় পরিণত হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে পৌরসভার একাধিক বাসিন্দা ক্ষোভ নিয়ে বলেন, আমরা জাজিরার মানুষ আসলে অনেক আবেগী। যারা মুখে একটু হাসি নিয়ে কথা বলে তাদের অনেক ভালোবেসে ফেলি এবং বিশ্বাস করে নিজেদের প্রতিনিধি বানাই। অথচ তারা নির্বাচিত হয়ে আমাদের কথা মনে রাখে না। সবাই নিজেদের আখের গুছানোয় ব্যস্ত। সড়কবাতির মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে চললেও মেয়রের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলো না।

সড়কবাতি স্থাপন প্রকল্পের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জেরিন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জাকির সরদার বলেন, আমার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পেলেও কাজটি আমি নিজে করছি না। কে করবে তা মেয়র জানে। আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে আমাদের মেয়র অনেক প্রকল্পের কাজ করেন। আমি শুধু বিল উঠানোর সময় স্বাক্ষর করে দেই। সেখানে আমার একটি পারসেন্টিস থাকে।

জানতে চাইলে জাজিরা পৌরসভার মেয়র মো. ইদ্রিস মিয়াকে বলেন, সড়কের পাশে গাছ থাকার কারণে সড়কবাতি প্রকল্পের কাজ শুরু করা যায়নি। এখন গাছ কাটা ছাড়াই কাজ শুরু করা হবে। মালামাল ক্রয়ের জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মেয়রের কাছে সড়কবাতি (আলোকসজ্জা) প্রকল্পের অনুমোদনের কপি চাইলে তিনি বলেন, এগুলো দেখার সাংবাদিকদের কোনো এখতিয়ার নেই। চাইলে শুধু তথ্য দেওয়া যেতে পারে।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনা বলেন, সড়কবাতি প্রকল্পের কাজ পৌরসভার নিজস্ব কাজ। এখানে আমাদের কিছু করার নাই। তবে আমি খোঁজ নিয়ে দেখব কি কারণে সড়কবাতির (আলোকসজ্জা) কাজ শুরু করা হয়নি। জাজিরায় রাতের বেলা সড়কে অন্ধকার নেমে আসে। বাতিগুলো লাগানো থাকলে পৌরবাসীর জন্য অনেক ভালো হবে চলাচল করতে।


আরও সংবাদ

জরুরি হটলাইন