রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় টাকার বিনিময়ে প্রাকটিক্যাল পরীক্ষায় নম্বর দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে কয়েকটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, কাউনিয়া দ্বিমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তোজাম্মেল হক এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তার সামনে রাখা একটি খাতার ভেতরে রাখছেন। সেই খাতায় তাদের রোল নম্বর লিখেও রাখছেন।এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রধান শিক্ষককে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) উপজেলা পরিষদের পাশে অবস্থিত কাউনিয়া দ্বিমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা জানিয়েছেন।
অভিযোগকারী ছাত্র-ছাত্রীরা আরও জানান, ইতোপূর্বের পরীক্ষাগুলোতেও তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের বেশি নম্বর দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছিলেন। বিগত সময়েও তার টাকার বিনিময়ে নম্বর দেওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় খবরের শিরোনাম হয়েছিল।তিনি গরিব, মেধাবী কিংবা মধ্যবিত্ত ছাত্র-ছাত্রী কিছুই বোঝেন না। সবার কাছ থেকেই টাকা নেন। টাকা ছাড়া তিনি প্র্যাকটিক্যালের কোনো নম্বর দেন না।নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হক রংপুর নগরীতে থেকে বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। তিনি উপজেলায় বসবাস করেন না। ইতোপূর্বেও প্রধান শিক্ষক এমন কিছু অনিয়ম করেছেন, যা কর্তৃপক্ষ জানে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ জেনেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. তোজাম্মেল হক বলেন, ভিডিওটি আমাকে ফাঁসানোর জন্য করা হয়েছে। তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেননি। তিনি আরও বলেন, শুধু আমিই কেন, আরও অনেকেই আছে যারা এর সঙ্গে জড়িত।এ ব্যাপারে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানি কমান্ডার সরদার আব্দুল হাকিম জানান, ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও টাকার বিনিময়ে নম্বর দেওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। এবারের অভিযোগের কথা জানতে পেরেছি। বিষয়টি ইউএনওকে জানিয়েছি। যেহেতু ভিডিওটি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট তাই ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার এখতিয়ার ইউএনও’র। স্কুলের সভাপতি হিসেবে ইউএনও মহোদয় যদি আমার কাছে কোনো সহযোগিতা চান তাহলে অবশ্যই করব।এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিদুল হক জানান, এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। এরপরও ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে। ওই শিক্ষক দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।