মোঃ মোমিন ইসলাম
প্রতিনিধি, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়
যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচআরএম বিভাগের সহকারী শিক্ষক অধ্যাপক সাজন সাহাকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং তাকে মদন দানকারী একই বিভাগের বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক রিজওয়ান আহমেদ শুভ্রকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ।
আজ ১৪ই মার্চ (বৃহস্পতিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৪ তম জরুরী সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ড. হুমায়ুন কবির।তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আজকের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তনুযায়ী অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক সাজন সাহাকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং রেজওয়ান আহমেদ শুভ্র কে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কর্তৃক চলমান তদন্ত প্রক্রিয়া চলতে থাকবে।এ সময় শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে রেজওয়ান শুভ্র কে কতদিনের জন্য সাময়িক বহিষ্কার করা হলো তা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন যতদিন পর্যন্ত আমাদের তদন্ত শেষ না হবে ততদিন পর্যন্ত।
শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে ড. সৌমিত্র শেখার বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবরই শিক্ষার্থী সুলভ। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে তাদের দাবি গুলো মেনে নিয়ে আমরা অভিযুক্ত দুই শিক্ষখকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে গৃহীত হয়েছি। পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে তারা যেন তাদের ভাষার প্রতি সংযত হয় এবং শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ থাকবে তাদের আচরণে যেন কোন শিক্ষার্থী কষ্ট না পেয়ে থাকে সে ধরনের আচরণ করা ।
এসময় শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে করতালি দিয়ে সাধুবাদ জানাই।এ সময় আন্দোলনের নেতৃত্ব দানকারী এইচআরএমবিভাগের শিক্ষার্থী ফারাবি বলে, আমরা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে স্বগত জানাই পাশাপাশি আমাদের আন্দোলনে আচরণে কেন শিক্ষক যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আমাদের সন্তান তুল্য মনে করে ক্ষমা করে দিবেন।
এরপর শিক্ষার্থীরা আনন্দ উল্লাস একটি রেলি বের করে এবং তা জয় বাংল, নজরুল ভাস্কর্য কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী কে প্রদক্ষিণ করে বিবিএ অনুসাদের সামনে এসে শেষ হয।রেলিতে অংশগ্রহণকারী এইচআরএম বিভাগের ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী আশেক-ইলাহি বলেন,আমরা অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বহিস্কারে অত্যন্ত খুশি পাশাপাশি প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। এসময়ে একই বিভাগের আরেক ছাত্রী বলেন,অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বহিস্কারে আমরা অত্যন্ত খুশি এবং আনন্দিত।
উল্লেখ্য যে গত ৩ মার্চ মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সানজানা আহসান ছোয়া একই বিভাগের শিক্ষক সাজন সাহার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে এবং তাকে মদদ দানকারী একই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেজওয়ান আহমেদ শুভ্রর স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি করেন। তার দাবি সাজন সাহা তাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাব যৌন নিপিড়ণ করে আসছে। ছাড়াও তাকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করার স্কিনশটের ছবি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের ডাক দেয় এবং গত কিছুদিন ধরেই নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্তাপ বিরাজ করছিল।